স্ত্রীভাগ্যে ধনলাভ তাঁদের হয়নি। বরং কলহপ্রিয়াদের কল্যাণে জীবন ছিল ওষ্ঠাগত। বহু টানাপোড়েনে সম্পর্কে ইতি টানার পরে গঙ্গায় ডুব দিয়ে দাম্পত্য জীবনের 'আদ্যশ্রাদ্ধ' সম্পন্ন করলেন ১৫০ জন 'মুক্তপুরুষ'।
সম্প্রতি পুরুষ অধিকার রক্ষাকারী সংগঠন 'সেভ ইন্ডিয়ান ফ্যামিলি ফাউন্ডেশন'-এর দশম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বারাণসীর গঙ্গাতীরে 'পিশাচিনী মুক্তি পূজা'র আয়োজন করা হয়েছিল। প্রাক্তন স্ত্রীদের ফেলে রেখে যাওয়া নেতিবাচক প্রভাব থেকে মুক্তি পেতে সেই সঙ্গে বর্তমান স্ত্রীদের জন্য শ্রাদ্ধের আয়োজন করলেন ওই দেড়শো হতভাগ্য পুরুষ।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রাজেশ ভাখারিয়া বিশ্বাস করেন, ভারতীয় আইন মূলত পুরুষের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট। তাঁর প্রশ্ন, 'দেশে পশুকল্যাণ মন্ত্রক আছে, কিন্তু ভারতীয় পুরুষদের নিরাপত্তার জন্য কোনও মন্ত্রক তৈরি হয়নি। পুরুষ কি পশুর চেয়েও অধম?'
পুরুষ অধিকার রক্ষা আন্দোলনের কর্মী অমিত দেশপান্ডের মতে, বর্তমান ভারতের আইন ও নীতি সবই নারী সহায়ক। এই কারণে এদেশে পুরুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করা 'যেন কোনও অপরাধ করার সামিল।'
অনুষ্ঠানের আর এক উদ্যোক্তা অনুপম দুবে জানিয়েছেন, শুধুমাত্র পুরুষের অধিকার রক্ষার জন্য তাঁদের লড়াই নয়। তাঁর মতে, পুরুষের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের পাশাপাশি দেশে নারীবাদের চূড়ান্ত অবক্ষয় হয়েছে। সংসার ভাঙার পিছনে সেটাই মুখ্য কারণ বলে তাঁর দাবি।
ভাখারিয়া জানিয়েছেন, প্রাক্তন স্ত্রীয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮ এ ধারায় তাঁকে টানা পাঁচ দিন আটক রাখার পরেই সংগঠন গড়ার ভাবনা সৃষ্টি হয়। তাঁর কথায়, 'অভিযোগ থেকে মুক্তি পেতে আমাকে ৫ বছর লড়তে হয়। পুরুষের বিরুদ্ধে যাবতীয় আইনের বিরোধিতার উদ্দেশেই সেভ ইন্ডিয়ান ফ্যামিলি ফাউন্ডেশন গঠন করি।'
সংগঠনের অনেকেরই আপত্তি রয়েছে পণপ্রথা বিরোধী আইন নিয়ে। তাঁদের বক্তব্য, বহু ক্ষেত্রেই এই আইনের অপপ্রয়োগ করা হচ্ছে। ভাখারিয়ার মতে, অনেক সময় ব্যক্তিত্বের সমস্যায় আক্রান্ত মহিলারাই পুরুষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করেন। এই সমস্ত ক্ষেত্রে আক্রান্ত পুরুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে আইনি পরামর্শ-সহ বিবিধ বিষয়ে সাহায্য করে সংগঠন।
ভাখারিয়ার সোজা হিসেব, প্রতি বছর মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে ৯২,০০০ স্বামী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন। তুলনায়, বছরে আত্মঘাতী হন ২৪,০০০ স্ত্রী।
Source, here.